পৃথিবীর সৃষ্টির ইতিহাস

Bangladesh Madrasah Education Board

Important Link

Contact Information

Bangladesh Madrasah Education Board, Dhaka
Address: 2 Orphanage Road, Baksibazar, Dhaka
Phone: 8626138, Accounts department : 9675520
Fax: 8616681, 8620841
E-mail: info@bmeb.gov.bd

History of Bangladesh Madrasah Education Board

Alia Madrasah was established in 1780 by British government and formed Madrasah education Board of Bengal. Madrasah Education was then started formally. Read more

Notice Board

Activities of Board:

  1. Madrasah Education Board approved the permission/recognition/renewal of Dakhil (S.S.C level) Alim (H.S.C level) according the rules of Govt. All the educational activities of both Fazil and Kamil are conducted by the Madrasah Education Board up to 2006.
  2. The registration and admission of Dakhil, Alim, Fazil and kamil (Fazil and Kamil till the session 2005-2006) are conducted by Madrasah Education Board. Read more
User profile picture

Professor Kaiser Ahmed

Chairman

Education is the key to a nation’s development. This is truer for a resource-scarce country like Bangladesh. Bangladesh has already become a low middle income country. Prime Minister Sheikh Hasina has envisioned transforming the country into a middle-income country by 2021 and a developed country by 2041. Read more

Latest Notice

';

grab.tc/?ref=83563

Grab Bitcoin every hour for life!

exe.io/ref/hjahirul93

indigocoin

Education Board Web-based Result System For Institutions

Education Board Web-based Result Publication for Institutes
Bangladesh Govt. Logo
Education Board Web-based Result System
For Institutions

Board:
EIIN:
Type of result:

Powered by Teletalk BD. Ltd.  TeleTalk_Logo
Developed and Maintained by Nixtec Systems NixtecSystems_Logo

Sur.ly ✓ Link safety is ON

??? Google-?? http://180.211.137.51:5839/ ?? ??????? 25 ??? 2018 12:10:20 GMT-?? ???????? ?????? ??????? ?????? ??? ??? ???? ????????? ?? ?????????? ???????? ??????? ???????? ????????? ??? ?????? ??? ?????. ????? ??????????-??? ?????????? ????? ???????: ?? ???????? ????? ????? ???? ????? ????? ????, Ctrl+F ???? ?-F (Mac) ????? ? ?????? ???? ??????? ?????
 
Gov Logo ???????? ?????? ???????? DPE LOGO
????????/???????? ?????? ?????? ???????
 
 
         
  ???????? ????
 
  ???????? ??:
 
 
  ??????
 
 
  ?????
 
 
  ??????/?????
 
    ??? ??????
   
  
Copyright © 2015 Directorate of Primary Education | All Rights Reserved.  
Developed by  Information Management Division (IMD), Directorate of Primary Education (DPE)  
BitMiner - free and simple next generation Bitcoin mining software

Thursday, August 17, 2017

জেনে নিন সমুদ্র সৃষ্টির ইতিহাস

জেনে নিন সমুদ্র সৃষ্টির ইতিহাস

এতো বিশাল গভীর সমুদ্র তৈরী হলো কী করে! এমন প্রশ্ন আপনার আমার মাথায় হয়ত সবসময় ঘুরপাক খায় প্রতিনিয়ত। কিন্তু আমাদের লাগামছাড়া চিন্তাভাবনা সঠিক পরিণতির থেকে যোজন যোজন দূরে নিয়ে যাবে। তাই, আমরা দ্বারস্থ হতে পারি ভূতাত্ত্বিকদের কাছে। শুনে আসি তারা কি বলে আর আমাদের চিন্তার লাগাম এখানেই টেনে দেই। তাদের মতে, পৃথিবীর মানচিত্রটা বেশ ভালো করে মাপজোখ করলে দেখা যাবে, পাঁচটা মহাসমুদ্র আর ছেষট্টিটা সমুদ্র মিলিয়ে পৃথিবীর প্রায় একাত্তর ভাগ অংশই জলে ঢাকা, আর বাদ বাকীটা স্থল অর্থাৎ মহাদেশ। সমুদ্র যে কত বড়ো (৩৬১,০০০,০০০ বর্গ কিঃমিঃ) তা অনেকটাই বোঝা যায় সমুদ্রের পাড়ে বসে চোখ দু’টো সামনে মেলে দিলে। শুধু আকারেই বড় নয়, গভীর দারুণ। কোথাও কোথাও এতা গভীর যে সেখানে আমাদের ডাঙার সবচেয়ে উচুঁ পাহাড় হিমালয়কে ছেড়ে দিলে তার কিছুই আর দেখতে পাওয়া যাবে না।

এ বিষয়ে প্রথম উল্লেখযোগ্য মতবাদটি বিবর্তন প্রবক্তা চার্লস ডারউইনের ছেলে জর্জ ডারউইনের। আজ থেকে প্রায় একশো ত্রিশ বৎসর আগে ১৮৭৮ খ্রীষ্টাব্দে জর্জ ডারউইন সৃষ্টির ব্যাপারে এক চমকপ্রদ কথা শোনালেন। তিনি বললেন প্রায় চারশো কোটি বৎসর আগে পৃথিবীর বাইরের খোলস যখন পুরোপুরি শক্ত হয় নি, ভেতরে নরম গরম অবস্থা, সেই সময়ে সূর্যের টানে পৃথিবীর তরল বুক থেকে খানিকটা অংশ চিটকে বেরিয়ে গিয়েছিল মহাকাশে। সেই উপড়ে চলে যাওয়া অংশই হলো চাঁদ। ফলে পৃথিবীর বুকে তৈরী হলো এক বিরাট গর্ত, যার নাম প্রশান্ত মহাসাগর।
জর্জ ডারউইনের এই মতবাদ উনিশ শতকে ও বিশ মতকের প্রথম দিকে খুব আলোড়ন তুললেও পরবর্তী কোনো বিজ্ঞানীই তার এই মতবাদে বিশ্বাস করেননি। এই মতবাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানীরা যুক্তি দিলেন, ভুস্তর সৃষ্টির পর, তা যত পাতলাই হোক এমনই কঠিন হয়ে পড়েছিল যে তখন তার পক্ষে আর পৃথিবী থেকে উৎক্ষিপ্ত হওয়া সম্ভব ছিল না। মহাসাগর সৃষ্টির ব্যাপারে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তত্ত্বটি হলো জার্মান ভূবিজ্ঞানী ওয়গনারের (১৮৮০-১৯৩০)। ১৯১২ খ্রীষ্টাব্দে প্রচারিত ‘চলমান মহাদেশ’ তত্ত্বটিকে তিনি মহাসাগর সৃষ্টির কথা বলেন।
ওয়েগনার বলেছেন, আজ থেকে পচিঁশ কোটি বছর আগেও পৃথিবীর মহাদেশ আর মহাসমুদ্রের চেহারা এইরকম ছিল না। তখন পৃথিবীর সব মহাদেশগুলি মিলে একটাই মহাদেশ ছিল। সেই আদি প্রাগৈতিহাসিক মহাদেশ ঘিরে ছিল এক আদি মহাসমুদ্র প্যান্থালসা। ভূবিজ্ঞানী ওয়েগনারের মতে খুব সম্ভবত । মেসোজোয়িক (Mesozoic) যুগের প্রথম দিকে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় কুড়ি কোটি বছর আগে প্রাকৃতিক কারণে প্যানজিয়া মহাদেশটি দু’টো টুকরোয় ভেঙে গিয়ে সরে গেল একে অন্যের কাছ থেকে। তাদের একটা টুকরোর নাম গণ্ডোয়ানা মধ্যপ্রদেশের ‘গণ্ড’ আদিবাসীদের নাম অনুসারে। এতে ছিল দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ভারত, অষ্ট্রেলিয়া আর কুমেরু।
অন্যটার নাম ‘লরেশিয়া’। যাতে ছিল ইউরোপ, এশিয়া গ্রীণল্যান্ড, আর উত্তর আমেরিকা। এই দুই মহাদেশের মাঝখানে রইলো টথিস সাগর। পরে গণ্ডোয়ানা আর লরেশিয়া আরো কয়েকটি টুকরোয় ভেঙ্গে গিয়ে ছড়িয়ে পড়লো চারিদিকে, আর তাদের মাঝখানে আদি মহাসাগর প্যানথালসার রুপ বদল হয়ে জন্ম নিল আজকের মহাসাগর। দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা ভেঙ্গে সরে গেল গণ্ডোয়ানা থেকে। এদের মাঝে জন্ম নিল দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর।
এ দুটি মতবাদ ছাড়াও আরও বেশ কিছু মতবাদ রয়েছে মহাদেশ ও সমুদ্র সৃষ্টির ব্যাপারে। তবে আধুনিক প্রযুক্তি বিজ্ঞানের যুগে সেই প্রকল্পগুলি নেহাৎই সেকেলে।
সমুদ্রে এতা জল এলো কোথা থেকে?
সকল সমুদ্রের জলের পরিমাণ পৃথিবীর আয়তনের তুলনায় কম হলেও, নয় নয় করে এই জল, ১৩৭ কোটি ঘন কিঃমিঃ এবং তা পৃথিবীর পৃষ্ঠে মাত্র পাচঁ কিঃমিঃ পুরু জলের স্তর তৈরী করেছে। বলা বাহুল্য যে, পৃথিবীর আবহমন্ডল থেকে এ জল পাওয়া যায় নি। কারণ আবহমন্ডলের জল ধরে রাখবার যা ক্ষমতা, তাতে পৃথিবীর সমুদ্র জলের উচ্চতা বড়জোর ৫ সেঃমিঃ বাড়ানো যেতে পারে তার বেশী নয়। কিন্তু পাঁচ কিলোমিটার পুরো জলের স্তর! অসম্ভব ! এরপর ভূবিজ্ঞানীরা তাকিয়েছেন ভূত্বকের (Crust) দিকে, যদিও তা থেকে জলের হদিস্ মেলেনি। ভূত্বকের নীচে রয়েছে ম্যাণ্টল (Mantle) যা তরল ও কঠিনের মাঝামাঝি একটা অবস্থান আছে।

ম্যাণ্টলের চরিত্র বিচার করে ভূবিজ্ঞানীরা রায় দিয়েছেন, পৃথিবীর এতো জল এসেছে ম্যাণ্টলের পেট থেকে আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে। অগ্ন্যুৎপাতের সময়ে আগ্নেয়গিরি জ্বালামুখ থেকে যে গ্যাস বেরিয়ে আসে তার অনেকটাই জলীয় বাষ্প। এই জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়েই যে জলের জন্ম তা না হয় বোঝা গেল, কিন্তু আগ্নেয়গিরির পেটে এতো জলীয় বাষ্প জমে কি করে? ভূবিজ্ঞানীদের মতে এই জল এসেছে জল (বা হাইড্রকসসিল) বাহী কিছু খনিজ পদার্থ থেকে। যা থাকে ম্যাগমার ভেতরে। যেমন অভ্র (Mica) স্যারপেনটিন (Serpentine), অ্যামফিবোল (Amphibole) ইত্যাদি খনিজগুলি যদি ২৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পোড়ে, তবে এই খনিজের জলটুকু বাইরে বেরিয়ে আসে, জলীয় বাষ্পের আকারে। ম্যান্টলের শিলার মধ্যে এ ধরণের খনিজ যথেষ্টই রয়েছে। এই কারণে পৃথিবীর সমুদ্রগহ্বর পূর্ণ হতে বেশী সময় লাগেনি। পৃথিবীর পিঠে যতো জল রয়েছে, তার চেয়ে কয়েক হাজারগুন জল পৃথিবীর বহু খনিজ পদার্থের মধ্যে এখনো বন্দী অবস্থায় আছে।
পৃথিবীর মোট জলের শতকরা ৯৮ ভাগই সমুদ্রের নোনাজল, বাদবাকি ২ শতাংশ ছড়িয়ে আছে হ্রদ, নদী, হিমবাহ, মেঘ ও পাথরের ফাটলে সঞ্চিত ভূজলে।
সমুদ্রে জল লোনা হবার কারণঃ
মহাসাগর গুলি সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করার প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে ১৮৭২ খ্রীষ্টাব্দে ব্রিটিশ জাহাজ ‘চ্যালেঞ্জার’ সমুদ্রের মোট ৭৭টি বিভিন্ন জায়গা থেকে জলের যে নমুনা সংগ্রহ করেছিল, তা বিশ্লেষণ করে ব্রিটিশ রসায়নবিদ ডিটমার (১৮৮৪) দেখেছেন, প্রতি লিটার সমুদ্রের জলে নানা জাতের লবনের পরিমাণ প্রায় ৩৫ গ্রাম। অথচ প্রায় একশো বছর পরেও দেখা যাচ্ছে সমুদ্রজলে লবনের পরিমাণ প্রায় একই আছে। যদিও আটলান্টিক মহাসাগরে জলে লবনের পরিমাণ (লিটারে ৩৪.৯০ গ্রাম), ভারত (লিটারে ৩৪.৭৬ গ্রাম) ও প্রশান্ত (লিটারে ৩৪.৬২ গ্রাম) মহাসাগরের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে নদী গুলো যতোই লবন এনে ফেলুক না সাগরের জলে, সমুদ্রের নোনতা ভাব তাতে বাড়ছে না। ভূবিজ্ঞানীরা হিসেব করে বলেছেন, সমুদ্রের জলে মোট ৫ x ১০১৮ কিলোগ্রাম লবন মিশে আছে।

পরীক্ষা করে দেখা গেছে সমুদ্রের জলে সোডিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডের পরিমাণ নদীর জলের তুলনায় অন্তত ১৭ গুণ বেশি। এসব সত্ত্বেও নিজস্ব প্রক্রিয়ায় সমুদ্রজল তার নোনতা ভাব একই জায়গায় ধরে রাখছে। এই প্রক্রিয়ার একটা ব্যাপার হলো, মহাদেশ গুলি থেকে অসংখ্য নদী নালা মারফৎ নানা ধরনের লবন সমুদ্র যতোটা নেয় তার অনেকটাই আবার ফিরিয়ে দেয় মহাদেশকে। যেমনঃ জোয়ারের সময়ে সাগরজলে মিশে থাকা লবন টুকু থিতিয়ে যায় মাটির শরীরে। সমুদ্রের জলকণা বাষ্প হয়ে মহাদেশগুলির দিকে ছুটে যাওয়ার সময়তেও সঙ্গে করে অনেকটা লবন নিয়ে যায়। এই লবনের কিছুটা অংশ অবশ্য করে আবার নদী জলের সঙ্গে মিশে সমুদ্রে ফিরে আসে। তবে বেশ কিছুটা পড়ে থাকে ডাঙার মাটিতে। এছাড়া সমুদ্রের জলে বিভিন্ন ধরনের লবনে র মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অধঃক্ষেপ (Precipitate) তৈরী হয়, যা থেকে সামুদ্রিক স্তর অথবা খনিজ নুড়িও (Nodule) তৈরী হতে পারে।
সমুদ্রে লবনের পরিমাণ সব সময়ে মোটামুটি একই রকম থাকলেও মাঝে মাঝে তারতম্য হয়। যেমন বৃষ্টিপাতের অঞ্চলে প্রচন্ড বৃষ্টিপাতের ফলে সমুদ্রের নোনতা ভাব সমসাময়িকভাবে যেমন কমে, তেমনি প্রচণ্ড গ্রীষ্মের সময়ে সমুদ্রের জল বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে গেলে, সমুদ্রের জলে নোনতা ভাব খানিকটা বেড়ে যায়। এছাড়া সমুদ্রের জল ঠান্ডায় জমে হিমশৈল তৈরী হলেও যে সমুদ্রে শতকরা মাত্র ৩০ ভাগ লবনই বরফের ভেতরে যেতে পারে, বাদবাকী ৭০ ভাগই পড়ে থাকে সমুদ্রের জলে।

No comments:

Post a Comment

Compnay
aglocoptr.com

0

জেনে নিন সমুদ্র সৃষ্টির ইতিহাস

এতো বিশাল গভীর সমুদ্র তৈরী হলো কী করে! এমন প্রশ্ন আপনার আমার মাথায় হয়ত সবসময় ঘুরপাক খায় প্রতিনিয়ত। কিন্তু আমাদের লাগামছাড়া চিন্তাভাবনা সঠিক পরিণতির থেকে যোজন যোজন দূরে নিয়ে যাবে। তাই, আমরা দ্বারস্থ হতে পারি ভূতাত্ত্বিকদের কাছে। শুনে আসি তারা কি বলে আর আমাদের চিন্তার লাগাম এখানেই টেনে দেই। তাদের মতে, পৃথিবীর মানচিত্রটা বেশ ভালো করে মাপজোখ করলে দেখা যাবে, পাঁচটা মহাসমুদ্র আর ছেষট্টিটা সমুদ্র মিলিয়ে পৃথিবীর প্রায় একাত্তর ভাগ অংশই জলে ঢাকা, আর বাদ বাকীটা স্থল অর্থাৎ মহাদেশ। সমুদ্র যে কত বড়ো (৩৬১,০০০,০০০ বর্গ কিঃমিঃ) তা অনেকটাই বোঝা যায় সমুদ্রের পাড়ে বসে চোখ দু’টো সামনে মেলে দিলে। শুধু আকারেই বড় নয়, গভীর দারুণ। কোথাও কোথাও এতা গভীর যে সেখানে আমাদের ডাঙার সবচেয়ে উচুঁ পাহাড় হিমালয়কে ছেড়ে দিলে তার কিছুই আর দেখতে পাওয়া যাবে না।

এ বিষয়ে প্রথম উল্লেখযোগ্য মতবাদটি বিবর্তন প্রবক্তা চার্লস ডারউইনের ছেলে জর্জ ডারউইনের। আজ থেকে প্রায় একশো ত্রিশ বৎসর আগে ১৮৭৮ খ্রীষ্টাব্দে জর্জ ডারউইন সৃষ্টির ব্যাপারে এক চমকপ্রদ কথা শোনালেন। তিনি বললেন প্রায় চারশো কোটি বৎসর আগে পৃথিবীর বাইরের খোলস যখন পুরোপুরি শক্ত হয় নি, ভেতরে নরম গরম অবস্থা, সেই সময়ে সূর্যের টানে পৃথিবীর তরল বুক থেকে খানিকটা অংশ চিটকে বেরিয়ে গিয়েছিল মহাকাশে। সেই উপড়ে চলে যাওয়া অংশই হলো চাঁদ। ফলে পৃথিবীর বুকে তৈরী হলো এক বিরাট গর্ত, যার নাম প্রশান্ত মহাসাগর।
জর্জ ডারউইনের এই মতবাদ উনিশ শতকে ও বিশ মতকের প্রথম দিকে খুব আলোড়ন তুললেও পরবর্তী কোনো বিজ্ঞানীই তার এই মতবাদে বিশ্বাস করেননি। এই মতবাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানীরা যুক্তি দিলেন, ভুস্তর সৃষ্টির পর, তা যত পাতলাই হোক এমনই কঠিন হয়ে পড়েছিল যে তখন তার পক্ষে আর পৃথিবী থেকে উৎক্ষিপ্ত হওয়া সম্ভব ছিল না। মহাসাগর সৃষ্টির ব্যাপারে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তত্ত্বটি হলো জার্মান ভূবিজ্ঞানী ওয়গনারের (১৮৮০-১৯৩০)। ১৯১২ খ্রীষ্টাব্দে প্রচারিত ‘চলমান মহাদেশ’ তত্ত্বটিকে তিনি মহাসাগর সৃষ্টির কথা বলেন।
ওয়েগনার বলেছেন, আজ থেকে পচিঁশ কোটি বছর আগেও পৃথিবীর মহাদেশ আর মহাসমুদ্রের চেহারা এইরকম ছিল না। তখন পৃথিবীর সব মহাদেশগুলি মিলে একটাই মহাদেশ ছিল। সেই আদি প্রাগৈতিহাসিক মহাদেশ ঘিরে ছিল এক আদি মহাসমুদ্র প্যান্থালসা। ভূবিজ্ঞানী ওয়েগনারের মতে খুব সম্ভবত । মেসোজোয়িক (Mesozoic) যুগের প্রথম দিকে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় কুড়ি কোটি বছর আগে প্রাকৃতিক কারণে প্যানজিয়া মহাদেশটি দু’টো টুকরোয় ভেঙে গিয়ে সরে গেল একে অন্যের কাছ থেকে। তাদের একটা টুকরোর নাম গণ্ডোয়ানা মধ্যপ্রদেশের ‘গণ্ড’ আদিবাসীদের নাম অনুসারে। এতে ছিল দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ভারত, অষ্ট্রেলিয়া আর কুমেরু।
অন্যটার নাম ‘লরেশিয়া’। যাতে ছিল ইউরোপ, এশিয়া গ্রীণল্যান্ড, আর উত্তর আমেরিকা। এই দুই মহাদেশের মাঝখানে রইলো টথিস সাগর। পরে গণ্ডোয়ানা আর লরেশিয়া আরো কয়েকটি টুকরোয় ভেঙ্গে গিয়ে ছড়িয়ে পড়লো চারিদিকে, আর তাদের মাঝখানে আদি মহাসাগর প্যানথালসার রুপ বদল হয়ে জন্ম নিল আজকের মহাসাগর। দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা ভেঙ্গে সরে গেল গণ্ডোয়ানা থেকে। এদের মাঝে জন্ম নিল দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর।
এ দুটি মতবাদ ছাড়াও আরও বেশ কিছু মতবাদ রয়েছে মহাদেশ ও সমুদ্র সৃষ্টির ব্যাপারে। তবে আধুনিক প্রযুক্তি বিজ্ঞানের যুগে সেই প্রকল্পগুলি নেহাৎই সেকেলে।
সমুদ্রে এতা জল এলো কোথা থেকে?
সকল সমুদ্রের জলের পরিমাণ পৃথিবীর আয়তনের তুলনায় কম হলেও, নয় নয় করে এই জল, ১৩৭ কোটি ঘন কিঃমিঃ এবং তা পৃথিবীর পৃষ্ঠে মাত্র পাচঁ কিঃমিঃ পুরু জলের স্তর তৈরী করেছে। বলা বাহুল্য যে, পৃথিবীর আবহমন্ডল থেকে এ জল পাওয়া যায় নি। কারণ আবহমন্ডলের জল ধরে রাখবার যা ক্ষমতা, তাতে পৃথিবীর সমুদ্র জলের উচ্চতা বড়জোর ৫ সেঃমিঃ বাড়ানো যেতে পারে তার বেশী নয়। কিন্তু পাঁচ কিলোমিটার পুরো জলের স্তর! অসম্ভব ! এরপর ভূবিজ্ঞানীরা তাকিয়েছেন ভূত্বকের (Crust) দিকে, যদিও তা থেকে জলের হদিস্ মেলেনি। ভূত্বকের নীচে রয়েছে ম্যাণ্টল (Mantle) যা তরল ও কঠিনের মাঝামাঝি একটা অবস্থান আছে।

ম্যাণ্টলের চরিত্র বিচার করে ভূবিজ্ঞানীরা রায় দিয়েছেন, পৃথিবীর এতো জল এসেছে ম্যাণ্টলের পেট থেকে আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে। অগ্ন্যুৎপাতের সময়ে আগ্নেয়গিরি জ্বালামুখ থেকে যে গ্যাস বেরিয়ে আসে তার অনেকটাই জলীয় বাষ্প। এই জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়েই যে জলের জন্ম তা না হয় বোঝা গেল, কিন্তু আগ্নেয়গিরির পেটে এতো জলীয় বাষ্প জমে কি করে? ভূবিজ্ঞানীদের মতে এই জল এসেছে জল (বা হাইড্রকসসিল) বাহী কিছু খনিজ পদার্থ থেকে। যা থাকে ম্যাগমার ভেতরে। যেমন অভ্র (Mica) স্যারপেনটিন (Serpentine), অ্যামফিবোল (Amphibole) ইত্যাদি খনিজগুলি যদি ২৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পোড়ে, তবে এই খনিজের জলটুকু বাইরে বেরিয়ে আসে, জলীয় বাষ্পের আকারে। ম্যান্টলের শিলার মধ্যে এ ধরণের খনিজ যথেষ্টই রয়েছে। এই কারণে পৃথিবীর সমুদ্রগহ্বর পূর্ণ হতে বেশী সময় লাগেনি। পৃথিবীর পিঠে যতো জল রয়েছে, তার চেয়ে কয়েক হাজারগুন জল পৃথিবীর বহু খনিজ পদার্থের মধ্যে এখনো বন্দী অবস্থায় আছে।
পৃথিবীর মোট জলের শতকরা ৯৮ ভাগই সমুদ্রের নোনাজল, বাদবাকি ২ শতাংশ ছড়িয়ে আছে হ্রদ, নদী, হিমবাহ, মেঘ ও পাথরের ফাটলে সঞ্চিত ভূজলে।
সমুদ্রে জল লোনা হবার কারণঃ
মহাসাগর গুলি সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করার প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে ১৮৭২ খ্রীষ্টাব্দে ব্রিটিশ জাহাজ ‘চ্যালেঞ্জার’ সমুদ্রের মোট ৭৭টি বিভিন্ন জায়গা থেকে জলের যে নমুনা সংগ্রহ করেছিল, তা বিশ্লেষণ করে ব্রিটিশ রসায়নবিদ ডিটমার (১৮৮৪) দেখেছেন, প্রতি লিটার সমুদ্রের জলে নানা জাতের লবনের পরিমাণ প্রায় ৩৫ গ্রাম। অথচ প্রায় একশো বছর পরেও দেখা যাচ্ছে সমুদ্রজলে লবনের পরিমাণ প্রায় একই আছে। যদিও আটলান্টিক মহাসাগরে জলে লবনের পরিমাণ (লিটারে ৩৪.৯০ গ্রাম), ভারত (লিটারে ৩৪.৭৬ গ্রাম) ও প্রশান্ত (লিটারে ৩৪.৬২ গ্রাম) মহাসাগরের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে নদী গুলো যতোই লবন এনে ফেলুক না সাগরের জলে, সমুদ্রের নোনতা ভাব তাতে বাড়ছে না। ভূবিজ্ঞানীরা হিসেব করে বলেছেন, সমুদ্রের জলে মোট ৫ x ১০১৮ কিলোগ্রাম লবন মিশে আছে।

পরীক্ষা করে দেখা গেছে সমুদ্রের জলে সোডিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডের পরিমাণ নদীর জলের তুলনায় অন্তত ১৭ গুণ বেশি। এসব সত্ত্বেও নিজস্ব প্রক্রিয়ায় সমুদ্রজল তার নোনতা ভাব একই জায়গায় ধরে রাখছে। এই প্রক্রিয়ার একটা ব্যাপার হলো, মহাদেশ গুলি থেকে অসংখ্য নদী নালা মারফৎ নানা ধরনের লবন সমুদ্র যতোটা নেয় তার অনেকটাই আবার ফিরিয়ে দেয় মহাদেশকে। যেমনঃ জোয়ারের সময়ে সাগরজলে মিশে থাকা লবন টুকু থিতিয়ে যায় মাটির শরীরে। সমুদ্রের জলকণা বাষ্প হয়ে মহাদেশগুলির দিকে ছুটে যাওয়ার সময়তেও সঙ্গে করে অনেকটা লবন নিয়ে যায়। এই লবনের কিছুটা অংশ অবশ্য করে আবার নদী জলের সঙ্গে মিশে সমুদ্রে ফিরে আসে। তবে বেশ কিছুটা পড়ে থাকে ডাঙার মাটিতে। এছাড়া সমুদ্রের জলে বিভিন্ন ধরনের লবনে র মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অধঃক্ষেপ (Precipitate) তৈরী হয়, যা থেকে সামুদ্রিক স্তর অথবা খনিজ নুড়িও (Nodule) তৈরী হতে পারে।
সমুদ্রে লবনের পরিমাণ সব সময়ে মোটামুটি একই রকম থাকলেও মাঝে মাঝে তারতম্য হয়। যেমন বৃষ্টিপাতের অঞ্চলে প্রচন্ড বৃষ্টিপাতের ফলে সমুদ্রের নোনতা ভাব সমসাময়িকভাবে যেমন কমে, তেমনি প্রচণ্ড গ্রীষ্মের সময়ে সমুদ্রের জল বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে গেলে, সমুদ্রের জলে নোনতা ভাব খানিকটা বেড়ে যায়। এছাড়া সমুদ্রের জল ঠান্ডায় জমে হিমশৈল তৈরী হলেও যে সমুদ্রে শতকরা মাত্র ৩০ ভাগ লবনই বরফের ভেতরে যেতে পারে, বাদবাকী ৭০ ভাগই পড়ে থাকে সমুদ্রের জলে।

Post a Comment

Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.

PaidVerts